খোন্দকার আবদুল মতিন।
রাজনৈতিক বিভেদের কারনে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি থাকা সত্ত্বেও পাল্টা আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করে আওয়ামীলীগের একাংশ । গত ২৫ সেপ্টেন্বর শনিবার রাজৈর উপজেলা আওয়ামীলীগ এক বর্ধিত সভা আহবান করে শুন্যপদে কো-অপ্ট সদস্য নিয়ে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষনা করে । এদিকে ঐ বর্ধিত সভার একমাস ৯দিন পর ৪ নভেন্বর বৃহস্পতিবার আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান এমপি অনুসারী গ্রুপও পাল্টা বর্ধিত সভা আহবান করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করে। দুটি গ্র“পের এ পাল্টাপাল্টি কমিটি ঘোষনা করায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা ও চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে । আসন্ন ইউপি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতেই উভয়পক্ষ এমন পদক্ষেপ গ্রহন করেছে বলে সচেতন মহলের জোরালো ধারনা।
দলীয় একাধিক সূত্রে জানাযায়, মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগ দীর্ঘদিন যাবত দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে রাজনৈতিক কর্মকান্ড করে আসছে । একটি অংশের নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় আওয়ামলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম ও জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সাহাবুদ্দিন মোল্লা । অপর অংশে নেতৃত্ব দেন আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি । এরই ধারাবাহিকতায় রাজৈর উপজেলা আওয়ামীলীগও দুটি অংশে ভাগ হয়ে রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে । একারনে দলীয় কোন্দল থাকায় রুট লেবেলের নেতাকর্মীরাও দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। ফলে দুইগ্রুপের মধ্যে পদক্ষেপ পাল্টা পদক্ষেপ ও সভা পাল্টা সভা লেগেই থাকে। দলীয় কর্মসুচী পালনেও এর প্রভাব পড়ে। আওয়ামীলীগের একনিষ্ঠ নিরীহ কর্মীরা পড়ে চরম বিপাকে। দুরত্ব বজায় রেখে চলে তারা।
দীর্ঘ ২৫বছর পর গত ২৫ সেপ্টেন্বর(২০২১) শনিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলা আওয়ামীলীগ অফিসে বর্ধিত সভা আহবান করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষনা দেয় উপজেলা আওয়ামীলীগ। আর সেই কমিটি অনুমোদন দেয় মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা ও সাধারন সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে। পূর্বে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা আওয়ামলীগের কমিটি ছিল । এ কমিটির বিভিন্ন পদের ২৩জন সদস্য ইতোপূর্বে মারা যাওয়ায় অনেক পদ শূন্য হয়ে যায় এবং এখন দলীয় বিধি অনুযায়ী ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কো-অপ্ট কমিটির ঘোষনা দেয় রাজৈর উপজেলা আওয়ামীলীগ । তবে যথাযথা মুল্যায়ন না হওয়ায় ও নানা কারনে বর্ধিত সভা থেকে বেড়িয়ে আসে শাজাহান খান এমপি সমর্থকরা। ফলে কমিটি ঘোষনার কয়েক ঘন্টা পর ওইদিন দুপুরেই রাজৈর সদরে অবস্থিত আওয়ামীলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান এম.পির বাসায় তারই সমর্থিত আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষনার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করে ।
এর পরিপ্রেক্ষিতে একমাস ৯দিন পর বৃহস্পতিবার (৪-১১-২১) শাজাহান খান এমপি‘র অনুসারী আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা উপজেলার সানেরপাড় শাহিন চৌধুরীর বাড়িতে পাল্টা বর্ধিত সভা আহবান করে এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের পাল্টা কমিটির আহবায়ক শাহাবুদ্দিন সাহার সভাপতিত্বে এ বর্ধিত সভায় উপজেলা আওয়ামীলীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পাল্টা আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করে । এ বর্ধিত সভায় বক্তব্য রাখেন, প্রধান অতিথি জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আবুল বাসার, কালকিনি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুক, মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পাভেলুর রহমান শফিক, জেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী সদস্য সাকিলুর রহমান সোহাগ, স্থানীয় এমপি প্রতিনিধি আ.ফ.ম ফুয়াদ, চেয়ারম্যান টিপু সুলতান, চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান টিপু, চেয়ারম্যান হামিদুল শাহআলম, চেয়ারম্যান বিধান বিশ^াস, এ গ্রুপে সদ্য যোগদানকারি ইউনিয়ন আওয়ামলীগ সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, সালাম মাষ্টারসহ অন্যান্য নেতা কর্মী প্রমুখ ।
এব্যাপরে আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দার আলী শেখ বলেন, ঐ আহবায়ক কমিটি গঠন প্রতারনার সামিল, সম্পুর্ন অবৈধ।
জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি শাহাবুদ্দিন মোল্লা বলেন, রাজৈরে জেলা কমিটির অনমোদিত একটি বৈধ কমিটি রয়েছে। দলের মধ্যে বিশৃংলা সৃষ্টির জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে এ আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে । যা সাধারন মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
আহবায়ক কমিটির আহবায়ক সাহাবুদ্দিন সাহা বলেন, তৃনমুলের চাহিদার মুখে সকলের পরামর্শে দলীয় বিধান মেনেই রাজৈর উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
Leave a Reply