টেকেরহাট (মাদারীপুর) সংবাদদাতা।
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে ভ্যান গাড়ীর সাথে ধাক্কা লাগার মত তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ওসিসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। এসময় দোকান ও বাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে এবং একটি মটর সাইকেল আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে উত্তেজিত গ্রামবাসী। আহতদেরে মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় ২জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ১২জনকে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং অন্যদেরকে বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুরে মুকসুদপুর উপজেলার বহুগ্রাম ইউনিয়নের বনগ্রাম বাজার ও আইকদিয়া গ্রামে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রনে মুৃকসুদপুর থানা পুলিশ ৪৮ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও ২ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে ।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ঈদের দিন (সোমবার) রাতে মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ আলী আশু মিয়ার ছেলে আলমগীর বনগ্রাম বাজার থেকে ওষুধের দোকান বন্ধ করে বাড়িতে ফিরছিলো । তখন মহারাজপুর গ্রামের কাদের খাঁর ছেলে বাবলু খা পেছন থেকে ভ্যান চালিয়ে এসে আলমগীরের গায়ে লাগিয়ে দেয় । ওই সময় এ নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায় আলমগীর প্রতিবাদ করলে বাবলুসহ কয়েক জন তাকে মারপিট করে । এবিষয় নিয়ে তাৎক্ষনিক স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি বাবলুকে আলমগীরের কাছে ক্ষমা চাইতে বলে এবং মিমাংসা করে দিলেও এতে বাবলুর আতœসম্মানে বাধে। মঙ্গলবার(২৬-৫-২০) সকালে আলমগীর বনগ্রাম বাজারে দোকানে গেলে বাবলু স্থানীয় লোক জন নিয়ে আলমগীরকে মারপিট করে এবং তার মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এঘটনা ছড়িয়ে পড়লে দুই পরস্পর বিরোধী আইকদিয়া ও পাইকদিয়া গ্রামের উভয় পক্ষের সমর্থক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং সংঘর্ষে লিপ্ত হয় । এ সংঘর্ষে প্রায় ৫০জন আহত হয় । পুলিশ প্রায় দুই ঘন্টা চেষ্টা করে এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এসময় পুলিশ সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রনে ৪৮ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও ২ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে । এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মুকসুদপুর ওসি আবুল কালাম আজাদ সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সংঘর্ষের কথা আমরা জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনি । ওই সময় উভয় পক্ষের লোক জন পুলিশকে উদ্দেশ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকে । এতে আমিসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হয় । আহত পুলিশ সদস্যরা মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রথমিক চিকিৎসা নিয়েছে । এবিষয় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক কর্মকর্তা মমিন-উল-হাবিব বলেন, পুলিশসহ কয়েকজন মারামারি রোগী হাসপাতালে আসে । কয়েকজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। অন্যদের ভর্তি করা হয়েছে । তবে তাদের অবস্থা বিপদ মুক্ত , চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। মুকসুদপুর-কাশিয়ানী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ৪৮ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও ২ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়েছে ।